Dohar and Nawabganj Regional Plan

Bengal Institute's proposed regional plan for Dohar and Nawabganj upazila in Dhaka

প্রমত্ত পদ্মার কোল ঘেঁষে দোহার, আর শান্ত ইছামতি নদীর পাড়ে নবাবগঞ্জ, দুটি  শহর যেন একে অপরের পরিপূরক। এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর হলোঃ পদ্মা, ইছামতি, ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদী। ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিশাল এক ভাণ্ডার কলাকোপা-বান্দুরা। উনিশ শতকেও এখানে জমিদারদের বসতি ছিল। প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ গ্রাম কলাকোপা-বান্দুরা একসময় ব্যবসা-বাণিজ্যের তীর্থস্থান ছিল। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য চোখ জুড়ানো। যার প্রাণ ইছামতি নদী। কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা পুরনো ঐতিহাসিক ভবন গুলো নিয়ে নদীর পাড় ধরে হতে পাড়ে পায়ে হেঁটে চলার চমৎকার সুযোগ। আনসার ক্যাম্প এর আশেপাশের ঐতিহাসিক বাড়িগুলোকে সংরক্ষণ করে ব্যাবহার উপযোগী করে তৈরি হবে একটি নান্দনিক আবাসিক রিসোর্ট। নদীর পাড় ঘেঁষে থাকবে প্রাকৃতিক উপাদানে নির্মিত একসারি কটেজ।

অনেক অপ্রতুলতার মধ্যেও সত্যিই ঈর্শ্বনীয় এর বিশালাকায় সংরক্ষিত মাঠগুলো। বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের মতো মাঠ এখানে অবহেলিত, দখলকৃত নয়। বরং, গাছপালা ঘেরা, পরিস্কার-পরিছন্ন, সুন্দর ছাঁটাঘাসের আবরন যুক্ত। ভবিষ্যতের জন্য এই মাঠগুলো সংরক্ষণ করতে পারলেই সকল বয়স ও পেশার নাগরিকেদের জন্য খোলামেলা, আলো-বাতাসপূর্ন  জনসমাগম স্থান নিশ্চিত করা যায়।

নবাবগঞ্জ অঞ্চলের প্রসিদ্ধ বাজারগুলোর মধ্যে জয়পাড়া বাজার এবং বান্দুরা বাজার অন্যতম। আমাদের প্রস্তাবনায় দোকানঘরগুলোকে দোতালা করে আরও অধিক সংখ্যক দোকানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আছে প্রশস্ত করিডোর এবং ফেরিওয়ালাদের সমাগমস্থান।দোকানগুলোকে এমনভাবে গোছানো হয়েছে যে, নদীবিমুখতা ভুলে গিয়ে  নদীকে কেন্দ্র করেই মানুষ ও পণ্যর আগমন ও বিকিকিনি। কাঁচাবাজার ও শুকনোবাজার আলাদা জোনে ভাগ করে দেয়ার ফলে, লোকজন স্বছন্দে ঘুরেবেড়াতে পারে। বাজার হয় পরিস্কার-পরিছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত।

কোমরগঞ্জ বাজারের খ্যাতি আছে আশেপাশের পাড়া-মহল্লা ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত। দুরদুরান্ত থেকে মানুষজন বাজার করতে আসে এখানে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যর সাথে মেলে রকমারী সামগ্রীও। এছাড়াও আছে একটি পশুর হাট। তাই মানুষের যাতায়াত এবং গরু-মহিষের আনা-নেয়ার  সুব্যবস্থা করে, পশুর হাটটিকে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করার কাজে লাগানো যায়।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে যদি আবাসনের ব্যবস্থা না করা যায়, তাহলেই যত্রতত্র, যেনতেন ভাবে বসতি স্থাপন করা শুরু করে এক পেশার মানুষ।

তবে প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে, মানুষের বসবাস উপযোগী, একটি নান্দনিক ও স্বাস্থ্যকর আবাসিক এলাকা গড়ে তুলে, জনসচেতনতা তৈরি করা যায়। যেহেতু শহরে বর্তমানে কোনও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জ্বালানী উৎপাদন ব্যবস্থা নেই, জলশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং স্থানীয় জনগণ ও সরকারের সম্মিলিত উদ্যোগে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার  প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এর নৌপথ ও নৌযান। সুন্দর, সাজানো নদীর পাড় ধরে বসার এবং জটলা করার জায়গা, নদী অবলোকন ও উপভোগ করার জন্য বোট মিউজিয়ামের চেয়ে উপযুক্ত জায়গা আর কি হতে পারে? যাদুঘরটি হবে নৌপথ ও নৌযান বিষয়ক আলোচনা ও গবেষণার তীর্থস্থান, সারাবছর চলবে নতুন-পুরানো সব ধরণের নৌকার প্রদর্শনী।

ডি এন কলেজ, স্কুল ও ছাত্রাবাস সংলগ্ন ডি এন কলেজ মাঠ প্রায় সবসময়ই মুখর থাকে নানান বয়সী ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের শিক্ষকদের পদচারনায়। কাছাকাছি অবস্থিত কয়েকটি মাঠ ও নদীর পাড়, একটি হাঁটা পথের সাথে সংযুক্ত করে গড়ে তোলা যায় চমৎকার একটি জনপরিসর।